সুপ্রিম কোর্টে এক আইনজীবীকে আরেক আইনজীবীর ছুরিকাঘাত

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:২১আপডেট : ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:২১

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে এক আইনজীবীর ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন আরেক আইনজীবী। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দুপুর ১টার পর আইনজীবী সমিতি ভবনের (অ্যানেক্স ভবন) ২০০৫ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

ছুরিকাঘাতে আহত ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলাম এই ঘটনার জন্য আইনজীবী মো. কাইয়ুমকে দায়ী করেছেন।

আহত আশরাফ রক্তভেজা শরীর নিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আমি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি সোচ্ছার ছিলাম, যখন কেউ কথা বলেনি। বিচারপতিদের দুর্নীতি নিয়েও সোচ্চার থেকেছি সব সময়। কিন্তু গাজী কামরুল ইসলাম সজলের (জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক) জুনিয়র কাইয়ুম এসে ছুরি দিয়ে মেরে গেছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আইনজীবী মো. কাইয়ুম। তিনি বলেন, ৮–১০ দিন আগে ব্যারিস্টার আশরাফ আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছিল। আমি মামুন মাহবুবের কাছে নালিশ দিতে গিয়েছিলাম। সেখানে আশরাফসহ ৪–৫ জন দরজা বন্ধ করে আমাকে মারধর করে। খবর পেয়ে কামরুল ইসলাম সজল আমাকে উদ্ধার করে।  

এদিকে, হামলার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, হামলার পর আহত আইনজীবী ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলামের মাথার বাম পাশ দিয়ে রক্ত ঝরছে।

প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, বেলা ১টার পর কাইয়ুমসহ চার জন আমার কক্ষে এসে ব্যারিস্টার আশরাফকে খুঁজতে থাকে। আমি বলি সে ওয়াশরুমে, বসো আসতেছে। অল্প সময় পর আশরাফ রুমে আসে। আসার পর তার সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে কাইয়ুম সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে আশরাফকে কয়েকটি আঘাত করে। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। বিষয়টি আমরা প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে জানিয়েছি। আমরা দুর্নীতিবাজ বিচারপতিদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছিলাম। সেটি যাতে না করি, এ জন্যই এই হামলা বলে দাবি করেন তিনি।

/বিআই/আরআইজে/
সম্পর্কিত
সুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তা ও পরিবারের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ
সহকর্মীকে ‘ছুরিকাঘাত’: অভিযুক্তকে বহিষ্কার করলো জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম
জার্মানিতে উৎসবে ছুরি হামলায় নিহত ৩
সর্বশেষ খবর
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন
উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনে স্থবির বাউবি
স্বস্তি নিয়ে মেট্রোরেলে উঠছেন যাত্রীরা
চললো মেট্রোরেল, যাত্রীদের মুখে হাসি
ডিএমপির লোগো
ডিএমপির ২৫ থানায় নতুন ওসি
ডায়েট লিস্টে রাখতে পারেন সহজপাচ্য স্যুপ। ছবি- সংগৃহীত
সহজপাচ্য ৩ স্যুপের রেসিপি জেনে নিন
সর্বাধিক পঠিত
ফাইল ছবি
আনসারের কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা সহ্য করা হবে না: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
শিক্ষক রুখসানা পারভীন
স্কুলে স্বামীর জন্য বিশ্রামাগার করা প্রধান শিক্ষকজীবন থাকতে পদত্যাগ করবো না
হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে গ্রেফতার শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে
বিচারপতি মানিকের অবস্থা আশঙ্কাজনক, আইসিইউতে ভর্তি 
সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক (ফাইল ছবি)
দালাল চক্রের মারধরের শিকার শামসুদ্দিন মানিক, খোয়ালেন নগদ টাকা-পাসপোর্ট
এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ
দেশে কর্মরত ভারতীয়দের চাকরি বাতিলের আহ্বান

চললো মেট্রোরেল, যাত্রীদের মুখে হাসি

জুবায়ের আহমেদ
২৫ আগস্ট ২০২৪, ১২:৩৩ আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২৪, ১২:৪১

চালু হওয়ার পর থেকেই স্বস্তির বাহন হিসেবে জনপ্রিয়তা পায় মেট্রোরেল। যানজটের এই শহরে দ্রুত যাতায়াতের জন্য রাজধানীবাসীর একাংশ আধুনিক এই গণপরিবহনটি প্রধান বাহন হিসেবে ব্যবহার করছে এখন। তবে মাঝে দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে টানা ৩৭ দিন বন্ধ ছিল মেট্রোরেল চলাচল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। অবশেষে সব অনিশ্চয়তা কাটিয়ে আবারও চলতে শুরু করেছে মেট্রোরেল। আর হাসি ফুটেছে রাজধানীবাসীর মুখে।

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারও মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়েছে রবিবার (২৫ আগস্ট) থেকে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর ১০ স্টেশন দুটিতে মেট্রোরেল থামবে না এবং যাত্রী সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এতে মিরপুরের কয়েকটি এলাকার বাসিন্দাদের অসুবিধা হলেও বিকল্প স্টেশন ব্যবহার করছেন তারা। সর্বপরি মেট্রোরেল চালু হয়েছে তাতেই খুশি যাত্রীরা।

সরেজমিন সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত মেট্রোরেল স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, দীর্ঘ বিরতির পর চালু হওয়া মেট্রোরেলের প্রথম দিন সকালে যাত্রীর সংখ্যা তুলনামূলক কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে।

কথা হয় যাত্রী মো. সৈকতের সঙ্গে। তিনি মিরপুর ১০ এর বাসিন্দা। আগে মিরপুর ১০ স্টেশন ব্যবহার করতেন। আজ বাসে করে ১১টায় এসে মেট্রোরেলে উঠেছেন। সৈকত বলেন, মেট্রোরেল বন্ধ থাকায় আগের অবস্থায় ফিরে যেতে হয়েছে। বাসে গাদাগাদি করে চড়া, জ্যাম ঠেলে দীর্ঘসময় জার্নি, আগের সব ধরনের অসুবিধাই ফেস করতে হয়েছে। তবে এখন মেট্রোরেল চালু হয়েছে, এটা আনন্দের।

শুরুতে যাত্রী কিছুটা কম হলেও সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকেশুরুতে যাত্রী কিছুটা কম হলেও সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে

আধা ঘণ্টার যাত্রা দেড় ঘণ্টা হয়ে গিয়েছিল জানিয়ে যাত্রী খালেদ মাহমুদ বলেন, মেট্রোরেল বন্ধ থাকায় প্রধান সমস্যা হয়েছিল চলাচলে সময় বেশি লাগতো। বাসা থেকে অফিসে যেতে অন্তত এক ঘণ্টা আগে বের হতাম। দুঃচিন্তায় ছিলাম, মেট্রোরেল যদি এক বছর বন্ধ থাকতো তাহলে কী অবস্থা হতো। যাই হোক এখন চালু হয়েছে, ভালো লাগছে।

আগারগাঁও স্টেশনের যাত্রী হোসনে আরা বলেন, নারীদের জন্য মেট্রোরেল ছিল একটি নিরাপদ ও ভরসার পরিবহন। সন্ধ্যার পর ফিরতে যতই দেরি হোক না কেন, কোনও টেনশন ছিল না। মেট্রোরেলে করে ঠিকই সহজে বাড়ি ফেরা যেতো। এটা অভ্যাসের মধ্যে চলে আসছিল। কিন্তু বন্ধ থাকায় অনেক ভোগান্তির মাঝে ছিলাম। বিশেষ করে রাস্তায় বাসও পাওয়া যেতো না তেমন। তখন সিএনজি, অটোরিকশা এসবে করেই চলাচল করতে হয়েছে।

মেট্রোরেলের ব্যাকআপ সিস্টেম চালু রাখার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সময় এসেছে সড়কের গণপরিবহনে পরিবর্তন আনার। মেট্রোরেলের মতো আধুনিক ও স্বস্তির যানে নিয়মিত চলাচলের পর বিকল্প হিসেবে বাস ব্যবহারে যাত্রীরা দাবি জানিয়েছেন সড়ক পরিবহনগুলোয় আমূল পরিবর্তন আনার। তারা বলেন, মেট্রোরেল যেভাবে মানুষের জীবনে দারুণ পরিবর্তন এনে দিয়েছে সেখানে বাসের কোনও উন্নতি না হওয়াটা দুঃখজনক। দ্রুত সময়ে বাস সেবাও আধুনিক করা হোক।

মেট্রোরেল থেকে মতিঝিলে নেমে গন্তব্যে ছুটছেন তারামেট্রোরেল থেকে মতিঝিলে নেমে গন্তব্যে ছুটছেন তারা

আগারগাঁও স্টেশনের যাত্রী সোমা আক্তার প্রিয়া বলেন, যারা নিয়মিত মেট্রোরেল ব্যবহার করতেন তারা বাস চলাচল অনেকটাই বন্ধ করে দিয়েছিলেন বলে আমি মনে করি। এখন বিকল্প হিসেবে বাস ব্যবহার করতে গিয়ে দেখি বাসের কোনও উন্নয়ন হয়নি, বরং ভোগান্তি আরও বেড়েছে। মেট্রোরেলের মতো এত চমৎকার পরিবহনে চড়ে অভ্যাসের পর তখন কী আর বাসে চড়ে কেউ স্বস্তি পাবে!

যাত্রী মিজান মোহাম্মদ বলেন, মেট্রোরেল যেমন করা সম্ভব হয়েছে, আশা করি বাসেরও পরিবর্তন আসবে। এটা এখন আবশ্যকীয় হয়ে গেছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের অংশ হিসেবে ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীর মিরপুরের ১০ নম্বর গোলচত্বরে থাকা পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা। আগুনের কালো ধোঁয়া মেট্রোরেল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। জননিরাপত্তার স্বার্থে ওইদিন বিকাল সাড়ে ৫টায় মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরদিন ১৯ জুলাই শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মেট্রোরেল বন্ধ ছিল। ওইদিন বিকালে দুর্বৃত্তদের হামলায় মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর ১০ নম্বর স্টেশনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ কারণে মেট্রোরেল বন্ধ ছিল এতদিন। উদ্বোধন হওয়ার প্রায় ২ বছর ৭ মাসের মাথায় এসে এমন পরিস্থিতি পড়তে হয়েছে মেট্রোরেলকে।

/আরআইজে/

ডিএমপির ২৫ থানায় নতুন ওসি

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৫ আগস্ট ২০২৪, ১২:২০ আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২৪, ১২:২০
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ২৫ থানায় অফিসার ইনচার্জ হিসেবে পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার ২৫ জন কর্মকর্তাকে পদায়ন করা হয়েছে।
 
শনিবার (২৪ আগস্ট) ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসানের সই করা এক অফিস আদেশে তাদের পদায়ন করা হয়।
 
পদায়নকৃত কর্মকর্তারা হলেন-
/কেএইচ/আরআইজে/

রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে দণ্ড মওকুফ পাওয়াদের তালিকা চেয়ে আইনি নোটিশ

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৫ আগস্ট ২০২৪, ১০:৩৭ আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২৪, ১০:৩৭

১৯৯১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০২৪ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে কত জনের কারাদণ্ড মওকুফ, দণ্ড স্থগিত বা হ্রাস করেছেন তার তালিকা প্রকাশ ও প্রদানের জন্য আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, আইন মন্ত্রণালয় সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিবকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

রবিবার (২৫ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. ওমর ফারুক এ নোটিশ পাঠান।

নোটিশে বলা হয়েছে, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত রাষ্ট্রপতি তার ক্ষমতাবলে বহু ক্রিমিনাল, হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীদের ক্ষমা বা তাদের দণ্ড মওকুফের আদেশ দিয়ে আসছেন। রাষ্ট্রপতির মার্জনায় বহু ফাঁসির আসামি ও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জেল থেকে বেরিয়ে সমাজে আবার মাফিয়া ডন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। রাষ্ট্রপতি কীভাবে, কোন প্রক্রিয়ায়, কাদের সুপারিশ বা তদবিরে দাগী, ঘৃণিত, কুখ্যাত সাজাপ্রাপ্তদের ক্ষমা করে বা দণ্ড মওকুফ করে দায় মুক্তি দিচ্ছেন তা একজন নাগরিক হিসেবে আমার/আমাদের জানার অধিকার আছে। রাষ্ট্রপতির ক্ষমা সংক্রান্ত সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতার অপব্যবহার বা কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বা রাজনৈতিক কোনোরূপ বল প্রয়োগ আছে কিনা তাও ক্ষতিয়ে দেখা দরকার।

নোটিশে আরও বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির দণ্ড মওকুফের ক্ষমতার উৎস বা কোন আইন দ্বারা তিনি কীভাবে কোন প্রক্রিয়ায় তা করে থাকেন বা দণ্ড মত্তকুফের মানদণ্ড কী? তা মানুষের জানা দরকার। তাই এখানে ১৯৯১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত যত জনকে রাষ্ট্রপতি দণ্ড মওকুফ করে বা দণ্ড স্থগিত করে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়েছেন তাদের নামের তালিকা ও কী প্রক্রিয়ায় তাদের ক্ষমা করা হয়েছে তার বিশদ বর্ণনা নোটিশ প্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে জানাতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দণ্ড মওকুফ হওয়াদের তালিকা না পেলে উচ্চ আদালতে রিট করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

/বিআই/আরআইজে/

সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী গ্রেফতার

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৫ আগস্ট ২০২৪, ১০:০৭ আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২৪, ১০:১৫

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী এবং গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম দস্তগীর গাজীকে গ্রেফতার গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি। শনিবার (২৫ আগস্ট) দিবাগত রাতে রাজধানীর শান্তিনগরের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে কোন মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। 

গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির পল্টন থানার ওসি মোল্লা মো. খালিদ হোসেন।

তিনি বলেন, সাবেক পাটমন্ত্রীকে শান্তিনগরের একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার এড়াতে তিনি সেখানে এক আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন। সেখান থেকে ডিবি পুলিশের একটি দল তাকে রাতে গ্রেফতার করে। তিনি এখন ডিবি কার্যালয়ে আছেন। তবে তাকে কোন মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানাননি ওসি খালিদ।

এর আগে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানায় শেখ হাসিনা ও গোলাম দস্তগীর গাজীসহ ১০৫ জনের নামে হত্যা মামলা করা হয়।

/কেএইচ/আরআইজে/

থানায় এখনও পোড়া গন্ধ, মানসিক ক্ষত কাটছে না পুলিশের

কবির হোসেন
২৫ আগস্ট ২০২৪, ১০:০০ আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২৪, ১০:০০

আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারা দেশে বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও, লুটপাট শুরু হয়। ক্ষোভের শিকার হয় পুলিশও। আন্দোলনকারীদের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগে পুড়িয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন থানা। হামলার শিকার হন পুলিশ সদস্যরা। এক পর্যায়ে কর্মস্থল ত্যাগ করেন তারা। পরে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আশ্বাসে এক সপ্তাহ পর দায়িত্বে ফেরে পুলিশ। এরও প্রায় দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনও কিছু থানায় পোড়া গন্ধ রয়ে গেছে। মানসিকভাবেও ক্ষত কাটিয়ে উঠতে পারছেন না পুলিশ সদস্যরা। ভয়ে অনেকে পরেননি পুলিশের ইউনিফর্মও।

গত বৃহস্পতি (২২ আগস্ট) ও শুক্রবার এ দুদিন ঢাকা মহানগর এলাকার কয়েকটি থানা সরেজমিন ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা এমনই চিত্র দেখা যায়।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার পর পল্টন থানায় গেলে দেখা যায়, থানার প্রধান ফটকের ওপরের সাইনবোর্ডটি এখনও ছেঁড়া। সেখান থেকে সামনের দিকে কয়েক পা বাড়ালে দেখা যায় আরও খারাপ অবস্থা। চার তলা ভবনটির পুরো দেয়ালজুড়ে কয়লার মতো কালো কালো ছাপ। আর ভবনের ভেতরে কোনও কিছুই অবশিষ্ট নেই। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে পুরো ভবন। আগুনে পোড়া গন্ধ থানার চারপাশে এখনও বাতাসে ছড়াচ্ছে। শুধু পল্টন থানা নয়, এ চিত্র দেখা যায় ডিএমপির মোহাম্মদপুর আদাবর থানায়ও।

থানায় সেবা নিতে আসছেন মানুষথানায় সেবা নিতে আসছেন মানুষ

পল্টন থানায় পুড়ে যাওয়া ভবনের বারান্দায় থানার একজন ডিউটি অফিসার বসে আছেন। আর ভবনটির উল্টো পাশে একটি টিন শেডের ছাউনিতে সদ্য নিয়োগ পাওয়া অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি), পুলিশ পরিদর্শক তদন্তসহ এসআই পদ মর্যাদায় আরও কয়েকজনকে বসে থাকতে দেখা গেলো। মামলা অভিযোগ কম থাকায় অনেক অবসর সময় কাটাতেও দেখা গেছে। এদের দুয়েকজন পুলিশের পোশাক পড়লেও বাকিরা ছিলেন সিভিল ড্রেসেই।

সেখানে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপপরিদর্শক (এসআই) বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমাদের থানায় কোনও কিছু নেই। সবকিছু ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে। তিনি বলেন, ডিউটি অফিসার বসে আছে যে চেয়ারটা দেখছেন, সেটাও বাইরের একজন লোক এসে দিয়ে গেছে। যেহেতু থানায় কোনও কম্পিউটারও নেই, তাই হাতে-কলমেই আপাতত কাজ করা হচ্ছে।

সদ্য নিয়োগ পাওয়া পল্টন থানার ওসি মোল্লা মো. খালিদ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, পুলিশকে বর্তমান যেমন দেখছেন, পুলিশ কি এমন? না, এরকম না। এখনও পুলিশ সদস্যরা ট্রমার মধ্যে আছে। তবুও আমরা দ্রুতই আগের অবস্থায় ফিরবো আশা করি। সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।

চলছে থানার কার্যক্রমচলছে থানার কার্যক্রম
এর আগে বিকাল ৪টার দিকে শাহবাগে থানায় গেলে দেখা যায়, সেনা নিরাপত্তায় কার্যক্রম চলছে। থানার ডিউটি অফিসারের কক্ষটি সচল থাকলেও অফিসার্স ইনচার্জ, পরিদর্শক তদন্ত ও অপারেশন তাদের কক্ষ তালাবদ্ধ দেখা গেছে।

খোলা মাঠে থানায় চারপাশে আঙিনায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের বসে থাকতে দেখা গেছে। সেখানে হারানো জিডি ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোনও অভিযোগ কিংবা মামলা দায়ের হয়নি।

শাহবাগ থানায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন থানার সিনিয়র এসআই মাইনুল ইসলাম পুলক। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, চারজন ছাড়া সবাই নিয়মিত অফিস করছে। আমাদের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়নি। এখনও আমাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা হওয়ায় ভয় একটু বেশি কাজ করছে। থানার অধিকাংশ কর্মকর্তাই পোশাক ছাড়া সিভিলে দায়িত্ব পালন করছেন।

থানা পুড়িয়ে দেওয়ার চিহ্ন রয়ে গেছে এখনওথানা পুড়িয়ে দেওয়ার চিহ্ন রয়ে গেছে এখনও

তিনি বলেন, জরুরি যে কাজগুলো আছে বর্তমানে সবই চলছে। তবে মামলা কম আসছে। আজ শুধু একটি ডাকাতি মামলা দায়ের হলো। তবে জিডি হচ্ছে প্রচুর।

এদিকে কিছুটা ভিন্ন চিত্র দেখা যায় রমন থানায়। থানাটির তেমন ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়ায় ব্যস্ততা দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের। থানার ডিউটি অফিসারকেও ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেলো। লোকজন থানায় বিভিন্ন হারানোর জিডি করতে আসলেও অভিযোগ ও মামলার সংখ্যা একেবারে সীমিত।

এর আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অভ্যুত্থানকে ঘিরে ৫ আগস্ট দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর রাজধানীসহ সারাদেশের সকল থানাগুলো পুলিশশূন্য হয়ে পড়ে। এরপর শুধু থানা নয় একে একে পুলিশের সব ইউনিটের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এরপর নিরাপত্তাহীনতায় কর্ম বিরতিরও ঘোষণা দেয় সংস্থাটি। পরে প্রায় চার দিন পর শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকাল থেকে রাজধানীর প্রতিটি থানায় পুলিশ সদস্যদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালন ও কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশ দেন নতুন আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম। সামরিক বাহিনীর তত্ত্বাবধান ও নিরাপত্তায় পুলিশ সদস্যরা থানায় আসেন। এরপর গত ১৫ আগস্ট রাজধানীসহ সারা দেশের সব থানায় অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হয়।

/ইউএস/
 
ছুরিকাঘাতে আহত ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলাম 
১ / ০