ইকোনমিক টাইমসের নিবন্ধে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা
বাংলাদেশ-ভারতের ১০ বছরের সম্পর্ক সোনালি অধ্যায়
ভারতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বশেষ সফর ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎসহ দুই দেশের সুসম্পর্কের নানা দিক নিয়ে কথা বলেছেন ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও বাংলাদেশে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। সেই সঙ্গে চীনের প্রভাব বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। ভারতের সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসে লেখা এক নিবন্ধে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা এসব কথা তুলে ধরেন। তিনি দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে গত ১০ বছরের সম্পর্কের সময়কে একটি ‘সোনালি অধ্যায়’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তার নিবন্ধে।
বাংলাদেশকে ভারতের ঘনিষ্ঠ ও মূল্যবান প্রতিবেশী হিসেবে উল্লেখ করে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর পর ২১-২২ জুন শেখ হাসিনার ভারত সফর বিস্ময়কর ছিল না। এশিয়ায় বাংলাদেশি পণ্যের সবচেয়ে বড় বাজার ভারত। সব মিলিয়ে সংক্ষিপ্ত এ সফর ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ গত ৪০ বছরে যা হয়নি, নরেন্দ্র মোদি এবং শেখ হাসিনার ১০ বছরের শাসনামলে তার চেয়ে বেশি দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তুলেছে দুই দেশ।
তবে শ্রিংলা বাংলাদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে ক্রমবর্ধমান চীনা প্রভাব বৃদ্ধিকে ‘গুরুতর উদ্বেগ’ হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, এর প্রভাবে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক বিরূপ হতে পারে। উল্লেখ্য, আগামী মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের কথা রয়েছে। এবারের সফরে দুই দেশের দুই প্রধানমন্ত্রী ১০টি চুক্তিসই করেন উল্লেখ করে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, এর মাধ্যমে চলমান গতিশীল সম্পর্কের পরবর্তী অধ্যায়ের ভিত্তি স্থাপন করা হয়। ভারত ২০৪৭ সালের মধ্যে উচ্চাকাক্সক্ষার ‘বিকশিত ভারত’ এবং বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ করতে চায়।
তিনি বলেন, রেলযোগাযোগ, সামুদ্রিক সহযোগিতা ও সুনীল অর্থনীতি, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা, স্যাটেলাইট ও সামরিক শিক্ষা সহযোগিতা বিষয়ে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। রেলযোগাযোগ সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন শহরসহ নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে যাত্রী ও পণ্যবাহী রেলের যোগাযোগ স্থাপিত হবে। স্বাস্থ্য ও ওষুধ খাতে সহযোগিতা, দুর্যোগ মোকাবিলা, সহনশীলতা ও প্রশমন এবং মৎস্যক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য তিনটি সমঝোতা স্মারক নবায়ন হয়েছে।
ভারত ও বাংলাদেশের ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে জানিয়ে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, এসব নদীর জলসম্পদ ব্যবস্থাপনা উভয় দেশের কাছে প্রাধান্য পেয়েছে এ সাক্ষাতে। এর মধ্যে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তির নবায়ন, তিস্তা নদীর সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় সম্মত হওয়ার কথা উঠে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে ঘোষিত উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে দুই দেশের বন্ধুত্ব নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ভারতের সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব।