ঢাকা, মঙ্গলবার ২০ আগস্ট ২০২৪
৫ ভাদ্র ১৪৩১, ১৪ সফর ১৪৪৬

বিদেশ থেকে মানুষ চিকিৎসা নিতে বাংলাদেশে আসবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শেয়ার
বিদেশ থেকে মানুষ চিকিৎসা নিতে বাংলাদেশে আসবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
চমেক হাসপাতালে মতবিনিময় করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। ছবি: কালের কণ্ঠ

বিদেশ থেকে খুব শিগগিরই মানুষ বাংলাদেশে চিকিৎসা নিতে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, বাংলাদেশ থেকে রোগী বিদেশে না গিয়ে বিদেশ থেকে রোগী আসবে এদেশে চিকিৎসা নিতে। সেই অবস্থা একদিন আমরা করব।’ 

শনিবার (৬ জুলাই) সকালে চটগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে চিকিৎসকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

চমেক হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এই সভায় চিকিৎসকদের পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, দেশে উন্নতমানের চিকিৎসা সেবা থাকা সত্বেও অনেকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ চলে যায়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশেই চিকিৎসা করান। প্রধান বিদেশ যান না।

গত ঈদের আগেও তিনি দেশে চিকিৎসা করান। এভাবে আমাদের সংসদ সদস্যরা যার যার এলাকায় হাসপাতালে গিয়ে যদি চেকআপ করান তাহলে হাসপাতালে চিকিৎসার মান আরো উন্নত হবে। দেশের চিকিৎসার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরে আসবে। মানুষ বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করানোর প্রবণতাও কমে আসবে।
’ 

স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে নতুন করে সাজাতে তৈরি করা একটি মডেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেখানো কথা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যখাত নিয়ে প্রেজেন্টেশন প্রধানমন্ত্রীকে দেখিয়েছিলাম। স্বাস্থ্যখাত নিয়ে সেখানে বিস্তারিত খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। আমরা যে প্রসিডিওর, মডেল তৈরি করেছি সেটা অনুযায়ী কাজ করতে পারলে স্বাস্থ্যখাতে ভালো কিছু হবে। দেশের চিকিৎসার মান উন্নত করতে আপনারা (চিকিৎসক) আমাকে সহযোগিতা করুন। দেশের মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশে না গিয়ে বিদেশের মানুষ চিকিৎসার জন্য দেশে আসবে।

এরআগে চমেক হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের প্রধান ও চিকিৎসকরা লোকবল সংকটের পাশাপাশি যন্ত্রপাতি নষ্ট থাকা এবং আরো বিভিন্ন সমস্যার কথা মন্ত্রীকে অবহিত করেন। এ সময় তাৎক্ষণিক এসব প্রশ্নের উত্তর দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। 

সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এমআরআই মেশিন ও সিটি স্ক্যান নষ্ট এটা শুনতেও আমার কাছে খারাপ লাগে। ঢাকার পর চট্টগ্রাম বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। এগুলো জরুরি ভিত্তিতে ঠিক করার জন্য প্রয়োজনীয় যা যা করা দরকার আমি করব।’ এ ছাড়া আরো যেসব সমস্যা আছে তা দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী। 

নিউরোসার্জারী বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. রবিউল করিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেনচমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন, চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার, নিউরোলজী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হাসানুজ্জামান, রেডিওলজী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুভাষ মজুমদার, রেডিওথেরাপী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সাজ্জাদ মোহাম্মদ ইউসুফ প্রমুখ। এ ছাড়া মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. ইফতেকার আহমেদ, চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী, জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম প্রমুখ।  

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে গাইনি বিভাগের চিকিৎসকরা ঢাকায় চলে যেতে চায় উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, গাইনির চিকিৎসকদের সবাই যদি ঢাকায় যেতে চায় তাহলে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল চলবে কেমন করে? এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী আমাকে একটা অনুশাসন দিয়েছেন। তিনি আমাকে বলেছেন, যার যেখানে পোস্টিং তার সেখানেই চাকরি করতে হবে। কেউ যদি যেতে না চায় বা আসতে না চায় তাহলে তাকে বলবা চাকরি ছেড়ে দিতে। যাকে যেখানে পোস্টিং দেওয়া হবে সেখানে তাকে যেতে হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, রোগী যাতে যথাযথ চিকিৎসা পায় সেটা দেখা যেমন আমার দায়িত্ব তেমনি চিকিৎসকরাও যাতে চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে সুরক্ষা পায় সেটা দেখাও আমার দায়িত্ব। চিকিৎসক সুরক্ষা ও মানসম্মত চিকিৎসা আমার টপ পাইওরিটি। রোগী ও ডাক্তার উভয়কেই সুরক্ষা দেয়ার দায়িত্বটা আমার। 

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন ১৫০ শষ্যা বিশিষ্ট চমেক হাসপাতালের বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ বার্ন ইউনিটের সাইট পরিদর্শন করে বলেন, চলতি মাসের শেষ দিকে নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারব। তারা (চায়না) কমিটেড যে দেড় বছর থেকে দুই বছরের মধ্যে ভবন নির্মাণ শেষ করবে। তারা এও বলেছেন দুই বছর সময় নাও লাগতে পারে। দেড় বছরের মধ্যে তারা কাজ শেষ করবেন। 

এরপর স্বাস্থ্যমন্ত্রী চমেক হাসপাতালের ইউরোলজি, পেডিয়াট্রিক, শিশু হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগ পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন করার সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব বিভাগে ভর্তি করা শিশু রোগী এবং তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন। 

এ দিকে চমেক হাসপাতালের পর দুপুরে ডা. সামন্ত লাল সেন চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন জোবরা গ্রামের একটি কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শনে গিয়ে রোগী ও চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

থানা থেকে বের হতে ভয় কাটেনি পুলিশের, দুর্বৃত্তরা বেপরোয়া

লুট হওয়া ৮২৬ অস্ত্রসহ ২২ হাজার ২৬০টি গুলি-টিয়ার গ্যাসের শেল উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
থানা থেকে বের হতে ভয় কাটেনি পুলিশের, দুর্বৃত্তরা বেপরোয়া
প্রতীকী ছবি

‘আমরা এখনো আতঙ্কে আছি। পুরোদমে কাজ শুরু করতে পরছি না। নাশকতায় পুরো ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক অস্ত্র লুট হয়েছে।

পরিস্থিতি বুঝে আমরা কাজ করছি। আমাদের টহল এখনো চালু হয়নি।’ গতকাল সোমবার এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন উত্তরা পূর্ব থানার ওসি মাহমুদুল হাসান।

থানার বর্তমান কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শুধু অস্থায়ীভাবে অফলাইনে জিডি চালু রয়েছে।

অনলাইনে আমরা এখনো কোনো কার্যক্রম চালু করতে পারিনি। আমরা এখন উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারে আমাদের কার্যক্রম চলমান রেখেছি।’

একইভাবে রাজধানীর বংশাল থানার পুলিশ সদস্যরা বলেন, আমরা থানাতেই কার্যক্রম চালাচ্ছি। আমাদের কার্যক্রম চলছে।

তবে পুরোদমে এখনো চালু করতে পারিনি। টহল সীমিত পরিসরে হচ্ছে, গাড়ি নেই তো।
বাড্ডা থানার এক পুলিশ সদস্য বলেন, ‘আমরা এখনো পুরোদমে কার্যক্রম শুরু করতে পারিনি। থানায় সব পুলিশ সদস্য যোগদান করেছেন। আমরা আমাদের থানাতেই অবস্থান করছি।

সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে অল্প আকারে টহল দিচ্ছি।’

শুধু এই তিনটি থানাই নয়, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার জেরে রাজধানীসহ সারা দেশের বেশির ভাগ থানার চিত্র বর্তমানে একই। পুলিশ সদস্যরা মাঠে নেমে পুরোদমে আগের মতো কাজ করতে ভয় পাচ্ছেন।

এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুলিশের এই অবস্থার কারণে সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির দিকে। এখনো পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটছে। ডাকাত আতঙ্কে রয়েছে মানুষ। থানার কার্যক্রম চলছে ঢিমেতালে। সেনাবাহিনী সমাজে সার্বিক শৃঙ্খলা ফেরাতে পুলিশকে সহযোগিতা করছে।

লুট হওয়া থানার অস্ত্রে আইন-শৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কা : সারা দেশের থানাগুলো থেকে এ পর্যন্ত কত অস্ত্র, গুলি ও অন্যান্য সরঞ্জাম লুট হয়েছে তা এখনো তালিকাভুক্ত করতে পারেনি পুলিশ। তবে যেসব অস্ত্র লুট হয়েছে তার বেশির ভাগ এখনো উদ্ধার হয়নি। গতকাল সোমবারের মধ্যে যারা অস্ত্র জমা দেয়নি সেই অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন (অব.)।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, থানা-ফাঁড়িতে হামলা করে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার না হলে আগামী দিনে নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক ঝুঁকি থাকবে। লাইসেন্সবিহীন এসব অস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে চলমান পরিস্থিতি আরো অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে।

লুট হওয়া আরো ৮২৬ অস্ত্র ও ২২,২৬০টি গুলি-টিয়ার গ্যাসের শেল উদ্ধার : কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংতার জেরে সারা দেশে বিক্ষুব্ধ জনতা বিভিন্ন থানায় অগ্নিসংযোগ ও হামলা চালায়। থানা ও ফাঁড়িতে হামলার পর অস্ত্র-গোলাবারুদ লুট করে নেয় দুর্বৃত্তরা। তবে এখন পর্যন্ত পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য মতে, লুট হওয়া ৮২৬টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি উদ্ধার করা হয়েছে ২২ হাজার ৩৩১টি গুলি, টিয়ার গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড।

গতকাল বিকেলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর এই তথ্য জানান।

মন্তব্য

এক দিনেই ১২ সিটি মেয়রসহ ১৮৭৬ জনপ্রতিনিধি অপসারণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
এক দিনেই ১২ সিটি মেয়রসহ ১৮৭৬ জনপ্রতিনিধি অপসারণ

সারা দেশে ১২টি সিটি করপোরেশন এবং ৩২৩টি পৌরসভার মেয়রসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের অপসারণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সব মিলিয়ে এক হাজার ৮৭৬ জন জনপ্রতিনিধিকে অপসারণ করে এসব পদে প্রশাসক হিসেবে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

গত রবিবার স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এসংক্রান্ত তিনটি পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ ছাড়া গতকাল সোমবার ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রংপুর, গাজীপুর ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করেছে সরকার।

৬০ জন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং  ৪৯৩ জন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা হয়েছে। সারা দেশের উপজেলা পরিষদের ৯৮৮ জন ভাইস চেয়ারম্যানকে অপসারণ করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এর মধ্যে ৪৯৪ জন পুরুষ এবং ৪৯৪ জন নারী। গতকাল স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের স্থলে জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) দায়িত্ব পালন করবেন। অন্যদিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের জায়গায় দায়িত্ব পালন করবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও)।

এতে বলা হয়েছে, উপজেলা পরিষদ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪ এবং স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪ প্রয়োগ করে পৌরসভার মেয়র, জেলা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের নিজ নিজ পদ থেকে অপসারণ করা হলো।

এর মধ্যে মৃত্যুজনিত কারণে নাটোর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে।

সব মিলিয়ে ৬১টি জেলা পরিষদের শূন্য পদে প্রশাসকও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।  দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে সাতটি পৌরসভার প্রশাসককে।

এর আগে গত শুক্রবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ‘স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’, ‘স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’, ‘জেলা পরিষদ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’ এবং ‘উপজেলা পরিষদ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়া অনুমোদন করে। পরে এগুলো অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়।

ওই সংশোধনী অনুযায়ী বিশেষ পরিস্থিতিতে সরকার যদি জনস্বার্থে অত্যাবশ্যক বিবেচনা করে, তাহলে কোনো সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরকে অপসারণ করতে পারবে।

একইভাবে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদেরও অপসারণের ক্ষমতা থাকবে সরকারের। একই সঙ্গে সরকার এসব পদে প্রশাসক নিয়োগ দিতে পারবে।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এমনিতেই অনেক বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে হয়। এখন সরকার যেহেতু দায়িত্ব দিয়েছে, সেহেতু সেটা পালন করব।’

কসবা পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব পাওয়া অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) জেসমিন সুলতানা বলেন, ‘আমি সরকারের কর্মচারী। সরকার যখন যে দায়িত্ব দেবে, সেটা পবিত্র মনে করে পালন করব।’

১২ সিটি করপোরেশনের মেয়র অপসারণ

ঢাকার দুই সিটিসহ দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়রকে অপসারণ করে গতকাল প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

এতে বলা হয়, স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর ধারা ১৩-এর ক অনুযায়ী ওই সব সিটি করপোরেশনের মেয়রদের নিজ নিজ পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে।

একই সময় ওই ১২ সিটি করপোরেশনের মেয়রের শূন্য পদে ১২ জন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তিনজন অতিরিক্ত সচিবকে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির মহাপরিচালককে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, গাজীপুর ও ময়মনসিংহ সিটির মেয়র পদে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে নিজ নিজ বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারদের।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সিটি করপোরেশন আইনের ২৫(ক)-এর উপধারা (১) অনুযায়ী পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাঁদের প্রশাসক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নবনিযুক্ত প্রশাসক এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মহ. শের আলী বলেন, ‘সরকার দায়িত্ব দিয়েছে, তা পালন করব। নাগরিক সেবায় শৃঙ্খলা ফেরানোই আমার প্রথম কাজ।’ কাউন্সিলরদের পদ থাকবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা স্থানীয় সরকার বিভাগ সিদ্ধান্ত নেবে।

গতকাল নিজ দপ্তরে অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ বলেন, দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়রকে অপসারণ করা হলেও কাউন্সিলরদের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। একই সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নিয়েও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।

হাসান আরিফ বলেন, প্রশাসক থাকলে কাউন্সিলররা দায়িত্ব পালন করবেন কি করবেন না, সেটা এখন তাঁদের ব্যাপার। মূল কথা হচ্ছে, মেয়র এবং চেয়ারম্যানের জায়গায় প্রশাসক দায়িত্ব পালন করবেন। আমরা ধারাবাহিকভাবে কাজ করব। এখানে মার মার কাট কাটের কোনো বিষয় নেই। এটি সমগ্র স্থানীয় সরকারকে পরিচ্ছন্ন করার একটি প্রচেষ্টা।

সরকারের আদেশের পর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম। গতকাল সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে গিয়ে দায়িত্ব বুঝে নেন বলে কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন তিনি। মো. তোফায়েল ইসলাম বলেন, সিটি করপোরেশনে আজ গিয়ে সবার সঙ্গে বৈঠক করব। বৈঠক থেকে তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে করণীয় ঠিক করব৷ তারপর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যেসব কাজ করা দরকার সেগুলো করা হবে।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নগর ভবনের সচিব দপ্তরে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করে দায়িত্বভার বুঝে নেন তিনি। এরপর নগর ভবনের প্রথম থেকে দশম তলা পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত কক্ষগুলো পরিদর্শন করেন। আজ মঙ্গলবার তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।

এ সময় রাসিক প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর আমার প্রথম কাজ হচ্ছে সিটি করপোরেশনের মৌলিক যে কাজগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে সচল করা, যাতে  নাগরিক ভোগান্তি না হয়। পাশাপাশি স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি কাজ করা হবে। কাল করপোরেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বাকি কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে।

এ সময় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এ বি এম শরীফ উদ্দিন, সচিব মো. মোবারক হোসেন, প্রধান প্রকৌশলী নূর ইসলাম তুষার, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া আফরিন, বাজেট কাম হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম খান, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সাহেল মো. নূর-ঈ-সাঈদ, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এফ এ এম আঞ্জুমান আরা বেগম, নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) আহম্মেদ আল মঈন পরাগসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম ও রাজশাহী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি)

মন্তব্য

ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া কমপ্লেক্সে দুর্বৃত্তদের হামলা, ভাঙচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া কমপ্লেক্সে দুর্বৃত্তদের হামলা, ভাঙচুর
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ পিএলসি কমপ্লেক্সে গতকাল দুপুরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। কমপ্লেক্সটিতে কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ডেইলি সান, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর ডটকম, নিউজটোয়েন্টিফোর টিভি, টি-স্পোর্টস ও ক্যাপিটাল এফএম রেডিওর অফিস রয়েছে। ছবি : কালের কণ্ঠ

অন্য স্বাভাবিক দিনগুলোর মতোই গতকালও দেশের শীর্ষস্থানীয় মিডিয়া হাউস ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের (পিএলসি) গণমাধ্যমগুলোর অফিসে কর্মীরা নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু গতকাল সোমবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে এই দৃশ্য সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। কর্মব্যস্ত অফিসে হঠাৎ দুষ্কৃতকারীরা হামলা চালিয়ে নারকীয় তাণ্ডব শুরু করে। গণমাধ্যমগুলোর শান্তিপূর্ণ অফিসে সৃষ্টি হয় ভীতিকর এক পরিস্থিতি।

শতাধিক দুষ্কৃতকারী সশস্ত্র অবস্থায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের সামনে আসে। ধারালো অস্ত্র, হকিস্টিক, লাঠিসোঁটা নিয়ে ওই দুষ্কৃতকারীরা অতর্কিতে মিডিয়া হাউসের ভেতরে ঢুকে পড়ে। এ সময় তাদের মধ্যে কয়েকজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসী কায়দায় তারা হামলা চালিয়ে ব্যাপক তাণ্ডব শুরু করে।

ভাঙচুর

ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে গতকাল সাংবাদিকদের অনেক গাড়ি ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। ছবি : সিসিটিভি থেকে নেওয়া

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হামলাকারীরা স্লোগান দিতে দিতে জোর করে প্রধান ফটক খুলে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়ার গণমাধ্যমগুলোর কম্পাউন্ডে প্রবেশ করে। দুষ্কৃতকারীরা প্রধান ফটক থেকে শুরু করে ভাঙচুর। প্রথমে তারা রেডিও ক্যাপিটালের ভেতরে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।

হামলা চালিয়ে সেখানকার ডেস্ক, কম্পিউটারসহ অন্য সামগ্রী ভাঙচুর করে।

ওই সময় প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরতদের ধাওয়া করে দুষ্কৃতকারীরা। কয়েকজনকে মারধরও করা হয়। মুহূর্তের মধ্যে শান্ত স্বাভাবিক কর্মপরিবেশ সন্ত্রাসী হামলায় লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। দুষ্কৃতকারীদের হামলা থেকে প্রাণে বাঁচতে অনেকে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন।

ভাঙচুর

এফএম রেডিও ক্যাপিটালের অফিস দুর্বৃত্তরা তছনছ করে ফেলে। ছবি : কালের কণ্ঠ

রেডিও ক্যাপিটালে তাণ্ডব চালানোর পর বাইরে এসে দুষ্কৃতকারীরা মিডিয়া প্রাঙ্গণে রাখা অন্তত ২৫ থেকে ৩০টি গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের নিরাপত্তাকর্মীরা হামলাকারীদের বাধা দিতে গেলে তাদের দিকে লাঠি নিয়ে তেড়ে যায় দুষ্কৃতকারীরা। এ সময় কয়েকজন দুষ্কৃতকারীকে সামনে থেকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে।

এরপর দুষ্কৃতকারীরা দৈনিক কালের কণ্ঠ’র অফিসের ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায়। তারা ভেতরে ঢুকে কাচের দেয়াল ও দরজা ভাঙচুর করে। তারা অভ্যর্থনার দায়িত্বে থাকা অফিসকর্মীদের দিকে লাঠি নিয়ে তেড়ে যায়। এক পর্যায়ে তারা কালের কণ্ঠ’র অফিসে ঢোকার দরজা ভেঙে ফেলে। এরপর দুষ্কৃতকারীরা কালের কণ্ঠ’র অফিসকক্ষ ভাঙচুর করে। এ সময় অফিসে থাকা গণমাধ্যমকর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। হামলাকারীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে প্রাণ রক্ষায় তাঁরা এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করেন। এভাবে দুষ্কৃতকারীরা প্রায় আধঘণ্টা ধরে নারকীয় তাণ্ডব চালায়।

ভাঙচুর

ভাঙচুর করা হয় কালের কণ্ঠ’র অফিস। এ সময় দুর্বৃত্তরা প্রতিষ্ঠানটির কাচের দেয়াল ভাঙচুর করে। ছবি : কালের কণ্ঠ

দুষ্কৃতকারীদের সন্ত্রাসী হামলায় মিডিয়া হাউসজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে ছোটাছুটি করতে গিয়ে অনেকে আহত হন। দুষ্কৃতকারীরা ভবন ও মিডিয়া প্রাঙ্গণে থাকা সরঞ্জাম ও গাড়ি ভাঙচুর করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হামলাকারীদের মধ্যে বিভিন্ন বয়সী লোকজন ছিল। তাদের কারো কারো মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। বেশির ভাগ দুষ্কৃতকারীর হাতে ছিল লাঠি। অনেকে লুঙ্গি পরাও ছিল। এদের মধ্যে দুজন লাঠি দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে। তারা সন্ত্রাসী কায়দায় নানা অঙ্গভঙ্গি করতে থাকে।   

ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের পাশাপাশি তিনটি ভবনে কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ডেইলি সান, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর ডটকম, নিউজ টোয়েন্টিফোর চ্যানেল, টি স্পোর্টস ও ক্যাপিটাল এফএম রেডিওর অফিস রয়েছে।

এদিকে সন্ত্রাসী এ ঘটনায় র‌্যাব সদর দপ্তরের গণমাধ্যম শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান বলেন, হামলাকারীদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।

ভাঙচুর

ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া কমপ্লেক্সে ভাঙচুর করে এই দুর্বৃত্তরা। ছবি : কালের কণ্ঠ

দুষ্কৃতকারীদের এই হামলা গভীর চক্রান্তের অংশ এবং বিশেষ অশুভ উদ্দেশ্যে ঘটানো হয়েছে বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল। ছাত্র-জনতার বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করতে কিছু দুষ্কৃতকারী এই কাপুরুষোচিত হামলা চালিয়েছে বলে তারা মনে করছেন।

এই হামলার সঙ্গে শিক্ষার্থীরা জড়িত নন বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। কিছু দুষ্কৃতকারী নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে এ হামলা চালিয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা।

গতকাল নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ও ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের গণমাধ্যমগুলোর হামলার স্থান পরিদর্শন করতে এসে এমন মন্তব্য করেন।

মন্তব্য

প্রভাবশালী সাবেক ৪১ মন্ত্রী-এমপির দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
প্রভাবশালী সাবেক ৪১ মন্ত্রী-এমপির দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক
সংগৃহীত ছবি

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী ৪১ জন মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এই অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ অনুসন্ধানে একজন পরিচালকের নেতৃত্বে তিনটি টিম গঠন করা হয়েছে। দুদক সূত্র কালের কণ্ঠকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

দুদক সূত্র জানায়, গত ১৫ বছরে মন্ত্রী-এমপিদের মধ্যে কারো আয় বেড়েছে, কারো বেড়েছে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ। তাঁদের সম্পদ ও আয় বৃদ্ধির পরিমাণ সর্বনিম্ন ১০০ গুণ থেকে লাখ গুণ পর্যন্ত।

যাঁদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে তাঁরা হলেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী, সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।

এ ছাড়া সাবেক মন্ত্রীদের মধ্যে জুনাইদ আহমেদ পলক, মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, খালিদ মাহমুদ, চৌধুরী ফরিদুল হক, গোলাম দস্তগীর গাজী, ইমরান আহমদ, জাকির হোসেন, কামাল আহমেদ মজুমদার, জাহিদ আহসান রাসেল, নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শাজাহান খান, হাছান মাহমুদ, কামরুল ইসলাম, হাসানুল হক ইনুর নামও রয়েছে।

সাবেক সংসদ সদস্যদের মধ্যে এই তালিকায় রয়েছেন বেনজীর আহমেদ, সরওয়ার জাহান, শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, শহিদুল ইসলাম বকুল, শেখ আফিল উদ্দিন, ছলিম উদ্দীন তরফদার, কাজী নাবিল আহমেদ, এনামুল হক, মেহের আফরোজ চুমকি, নূর আলম চৌধুরী শাওন, শেখ হেলাল উদ্দীন, স্বপন ভট্টাচার্য, কাজিম উদ্দীন আহমেদ, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, মুহিবুর রহমান, মামুনুর রশীদ কিরন, জিয়াউর রহমান প্রমুখ। 

এর আগে গতকাল রবিবার বিগত সরকারের প্রভাবশালী ৪১ জন মন্ত্রী-এমপির দুর্নীতি অনুসন্ধান করতে দুদকে আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ