উপদেষ্টার ছেলেকে নিয়ে ঘুরলেন আ.লীগ এমপির ছেলে, চলছে সমালোচনা

বরিশাল প্রতিনিধি
১৪ আগস্ট ২০২৪, ১৯:০৪আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৪, ১৯:০৪

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সাত দিনের মাথায় বরিশাল ঘুরে গেলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর মেজো ছেলে মঈন আব্দুল্লাহ। তার সঙ্গে ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের ছেলে মুয়াজ আরিফ। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক মঈন আব্দুল্লাহর বাবা বরিশাল-১ আসনের সাবেক এমপি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই। মঈনের ভাই সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশাল সিটির সাবেক মেয়র। সরকার পতনের দিন তাদের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার দুপুরে প্রাইভেটকারে বরিশালে আসেন মঈন। প্রাইভেটকারটি নিজেই চালাচ্ছিলেন। এ সময় পাশে বসেছিলেন উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের ছেলে মুয়াজ আরিফ।

নগরীর কাউনিয়া এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে কালো রঙের একটি প্রাইভেটকার চালিয়ে বরিশাল নগরীতে আসেন মঈন। এ সময় সামনের আসনে বসা ছিলেন মুয়াজ। বেলা আড়াইটার দিকে মঈন কাউনিয়া ফার্স্ট লেনে তার নানা বাড়িতে আসেন। তাদের গাড়ির সঙ্গে দুটি সাদা প্রাইভেটকার ও তিনটি মোটরসাইকেল ছিল। সেই বাড়িতে দুপুরের খাওয়া-দাওয়া শেষে বের হওয়ার সময় স্থানীয়দের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন মঈন ও মুয়াজ। কাউনিয়া থেকে বের হয়ে নগরীর কালিবাড়ি রোডে সেরনিয়াবাত ভবনে যান তারা।

barisal-2মঙ্গলবার দুপুরে কালো রঙের একটি প্রাইভেটকার চালিয়ে বরিশাল নগরীতে আসেন মঈন

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর এই বাসভবনটি সরকার পতনের দিন পুড়িয়ে দিয়েছিল বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা। এই বাড়ি থেকে তিন জনের লাশ উদ্ধার হয়। যার মধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের টানা পাঁচবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর গাজী নঈমুল হোসেন লিটুর লাশও ছিল। মঈন ও মুয়াজ বাড়িটি বাইরে থেকে দেখেন। তবে ভেতরে যাননি তারা। পরে কালীবাড়ি রোড থেকে নগরীর মুসলিম গোরস্থানে গিয়ে মা বেগম সাহানারা আব্দুল্লাহ ও কাউন্সিলর গাজী নঈমুল হোসেন লিটুর কবর জিয়ারত করে বরিশাল ত্যাগ করেন।

হঠাৎ বরিশাল সফরের বিষয়ে জানতে চাইলে মঈন আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমার জন্মস্থান বরিশালে আমি যাবো, এতে অবাক হওয়ার কি আছে? আমি তো রাজনীতি করি না। আমি ব্যবসায়ী, এফবিসিসিআইর পরিচালক এবং সিআইপি। দুপুরের একটু আগে বরিশালে গিয়েছিলাম। মায়ের কবর জিয়ারত করেছি। তারপর কাউনিয়া এলাকায় মামা বাড়িতে গিয়েছি। সেখানে দুপুরের খাবার খেয়েছি। এরপর ফিরে এসেছি।’

এই সফরে উপদেষ্টার ছেলের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মঈন বলেন, ‘সে তো আমার ছোটবেলার বন্ধু। সেই শিশুকাল থেকে আমরা একসঙ্গে বড় হয়েছি। বন্ধুত্ব আর রাজনীতি মিলিয়ে ফেলবেন না।’

Barisal MOEN ABDULLAH PIc=14-08-24পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মঈন আব্দুল্লাহ

পুড়ে যাওয়া পৈতৃক বাড়ির ভেতরে না যাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার বাবা হাসানাত আব্দুল্লাহকে ছাড়া ওই বাড়িতে আমি কি করে যাই? পত্র-পত্রিকায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া আমাদের বাড়ির যেসব ছবি দেখেছি, তাতে সেখানে গেলে হয়তো নিজেকে সামলাতে পারবো না। ওই বাড়ির সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে অনেকবার রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু আমার দাদা শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের গড়া ওই বাড়িতে কোনোদিন একটা ঢিলও পড়েনি। যতদূর জানি, আমার পরিবারের কেউ কখনও এভাবে কারও বাড়ি পোড়ায়নি। আমি বাবার সন্তান হিসেবে গর্ববোধ করি। ওই বাড়িতে যখন যাবো তখন বাবার সঙ্গেই যাবো।’

এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার ছেলেকে নিয়ে হাসানাতপুত্র মঈনের এই সফর ঘিরে বরিশালে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিশেষ করে উপদেষ্টার ছেলের আসাটাকে ভালোভাবে নেননি রাজনীতিবিদরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন জনপ্রতিনিধি জানিয়েছেন, পুরো বরিশালকে ১৫টি বছর শাসন করে অস্থিতিশীল করেছে হাসানাতের পরিবারটি। এখন তাদের প্রকাশ্যে ঘোরাটা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ছিল স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে। মঈন সেই শাসকের ভাইয়ের ছেলে। তার সঙ্গে উপদেষ্টার ছেলের বরিশাল আসাটা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। বন্ধুত্ব অথবা আত্মীয়তা থাকতে পারে, তবে সবার আগে দেশ এবং দেশের মানুষের কথা ভাবা উচিত ছিল মুয়াজের। এটি মুয়াজের বাবাকেও বিতর্কে ফেলবে।’

/এএম/
সম্পর্কিত
১০ সচিবের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশে মানুষের সুসম্পর্ক আছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভারত থেকে বক্তব্য দিতে থাকলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষতি হবে’
সর্বশেষ খবর
ঘরের মেঝেতে পড়ে ছিল মা ও দুই ছেলের লাশ (ছবি: বাংলা ট্রিবিউন)
বাড়ি ফিরে ঘরের মেঝেতে মিললো স্ত্রী ও দুই ছেলের রক্তাক্ত লাশ
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
১৫ আগস্ট সাধারণ ছুটি বাতিল, জাতীয় শোক দিবস বহাল!
টিভিতে আজকের খেলা (১৫ আগস্ট, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (১৫ আগস্ট, ২০২৪)
ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান। ফাইল ছবি।
ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানের পদত্যাগ
সর্বাধিক পঠিত
ডেভিড বার্গম্যান
সালমান রহমান ও আনিসুল হকের রিমান্ড নিয়ে প্রশ্ন তুললেন সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান
আবু মুহাম্মদ রায়হান (ছবি: বাংলা ট্রিবিউন)
‘হেফাজতের রক্ত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অনুপ্রেরণা’, সমন্বয়কের মন্তব্যে সমালোচনার ঝড়
এস আলমের নিয়ন্ত্রণাধীন সাত ব্যাংকের লোগো
এস আলমের ৭ ব্যাংকে বিশেষ সুবিধা বন্ধ
জাহাঙ্গীর কবির (ছবি: সংগৃহীত)
শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনালাপ ভাইরাল, আ.লীগ নেতা গ্রেফতার
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মোমবাতি প্রজ্বালন
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে মোমবাতি প্রজ্বালন, হয়েছে হামলাও

বাড়ি ফিরে ঘরের মেঝেতে মিললো স্ত্রী ও দুই ছেলের রক্তাক্ত লাশ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
১৫ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৩৩ আপডেট : ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৩৩

পঞ্চগড়ে এক মা ও তার দুই ছেলেসহ একই পরিবারের তিন সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার (১৪ আগস্ট) রাতে পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের কুরুলিয়া গ্রামের দলুয়াদিঘী এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। বাংলা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুসা মিয়া।

নিহতরা হলেন বোদা বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী সেলিম শেখের স্ত্রী তাসলিমা আক্তার (৩৫) এবং তার দুই ছেলে সৈকত (১৩) ও সায়হাম (৯)। তিন জনকেই এলোপাতাড়ি ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব বা ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করছেন।

রাতেই এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের চিত্র দেখতে শত শত মানুষ ওই বাড়িতে ভিড় করেছেন। তবে এখনও এই হত্যাকাণ্ডের কোনও রহস্য জানতে পারেনি পুলিশ। তবে সম্ভাব্য অপরাধীদের গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করছেন তারা। নির্মম এ ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বোদা বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী সেলিম শেখ দোকান বন্ধ করে রাত এগারোটা থেকে সোয়া ১১টার মধ্যে বাসায় ফেরেন। এ সময় তিনি বাড়িতে প্রবেশের প্রধান ফটক খোলা দেখতে পান। পরে ঘরের মূল দরজাও খোলা পান তিনি। ঘরে প্রবেশ করতেই রক্তে ভেজা নিথর তিনটি মরদেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন সেলিম। এ সময় তার আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন মেঝেতে পড়ে থাকা তিনটি লাশ দেখতে পান। স্থানীয়রা প্রথমে পুলিশ পরে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের খবর দেন।

স্থানীয়রা জানান, সেলিম শেখ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সমর্থক তবে বর্তমানে সরাসরি রাজনীতি করছেন না। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচার দাবি করেছেন নিহতের পরিবার ও স্বজনরা। 

বলরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে সেলিম শেখের বাসায় আসি। ড্রয়িং ও ডাইনিং সম্মিলিত একটি ঘরের মেঝেতেই তিন জনের মরদেহ পড়ে ছিল। বিষয়টি নির্মম ও বেদনাদায়ক। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবে প্রশাসন এটাই প্রত্যাশা।’

আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুসা মিয়া জানান, মরদেহগুলোর সুরতহাল এবং আলামত সংগ্রহ করার পর ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হবে। অপরাধীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। পুলিশ ও সিআইডি বিষয়টি তদন্ত করছে।

/কেএইচটি/

সাবেক এমপি বদি ও চেয়ারম্যান জাফরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
১৫ আগস্ট ২০২৪, ০০:০৭ আপডেট : ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০০:০৭

কক্সবাজারে টেকনাফে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও হামলার অভিযোগে সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদিকে প্রধান আসামি করে ৩৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এতে টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমেদকেও আসামি করা হয়েছে। 

বুধবার (১৪ আগস্ট) কক্সবাজার জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বাদী হয়ে এই লিখিত অভিযোগ দেন। এতে অজ্ঞাতনামা ৭০-৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের বিতর্কিত সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির নেতৃত্বে জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর মালিকানাধীন পেট্রোল পাস্প, আলো শপিং কমপ্লেক্স, হোটেল নাফ কুইনসহ আরও বেশ কটি স্থাপনায় সশস্ত্র হামলা চালানো হয়। এতে ব্যাপক গুলি ও ভাঙচুরের পাশাপাশি দোকান লুটপাট করে তার অনুসারীরা।

অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উসমান গনি বলেন, ‌‘অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

/এএম/
আজ শোকাবহ ১৫ আগস্ট

বাঙালির শোকের দিনে গোপালগঞ্জে যত আয়োজন

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
১৫ আগস্ট ২০২৪, ০০:০২ আপডেট : ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০০:১৪

আজ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। বাঙালির শোকের দিন। স্বাধীনতার স্থপতি, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৯তম শাহাদাতবার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ইতিহাসের নৃশংস ও মর্মস্পর্শী এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাংলাদেশের মানুষ হারায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। বীরত্ব, ত্যাগ, দৃঢ়প্রত্যয়, নেতৃত্বগুণ; একজন রাজনীতিক হিসেবে এর সব কটির সম্মিলন জাতি দেখেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যে, যা সহজেই তাঁকে স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির পিতার মর্যাদায় আসীন করেছে। ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তিনি স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে। আজ শোকের দিনে বাঙালি তাদের মহান নেতাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

শোক দিবস উপলক্ষে গোপালগঞ্জে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। যথাযথ মর্যাদায় জাতির পিতার শাহাদাতবার্ষিকী পালন করবে তারা। বিশেষ করে দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালনের জন্য একাধিক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। এই উপলক্ষে সকাল ৭টায় পুরো জেলায় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, সংগঠনের সর্বস্তরের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দলীয় কর্মসূচি শুরু হবে।

সকাল ৭টা ২০ মিনিটে জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতির পিতার  প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন। সেখানে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হবে। সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধি সৌধের বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। দুপুর ১২টায় টুঙ্গিপাড়ায় জাতির জনকের সমাধি সৌধ কমপ্লেক্স চত্বর জামে মসজিদে ১৫ আগস্টে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, দুপুর সাড়ে ১২টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।

জাতীয় শোক দিবসে এসব কর্মসূচি আয়োজনের কথা বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিএম শাহাবুদ্দিন আজম। তিনি বলেন, ‘দিবসটি উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় এবং সমগ্র জেলায় সকাল ৭টায় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, দলীয় ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ৭টা ২০ মিনিটে জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন। এরপর বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধের বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। দুপুরে সমাধি সৌধ কমপ্লেক্স চত্বর জামে মসজিদে ১৫ আগস্টে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। দোয়া মাহফিল শেষে তবারক বিতরণ করা হবে। দিবসটি সফল করতে জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের সব নেতাকর্মী এবং সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করছি আমরা। এবার এগুলো থাকছে দিবসের কর্মসূচি। এসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।’

gopalganjগোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিএম শাহাবুদ্দিন আজম

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধু ছাড়াও সেই রাতে তাঁর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, বঙ্গবন্ধুর ফোন পেয়ে তাঁর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা কর্নেল জামিলউদ্দিন আহমেদ, এসবির কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান ও সেনাসদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হককে হত্যা করা হয়। ওই রাতেই বঙ্গবন্ধুর ভাগনে যুবলীগের নেতা শেখ ফজলুল হক মনির বাসায় হামলা চালিয়ে তাঁকে এবং তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনিকে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত ও তাঁর কন্যা বেবি, পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত বাবু, সেরনিয়াবাতের বড় ভাইয়ের ছেলে সজীব সেরনিয়াবাত এবং এক আত্মীয় আবদুল নঈম খানকেও হত্যা করা হয়। ওই সময় বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে অবস্থান করায় বেঁচে যান।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ইনডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিচারের পথ রুদ্ধ করা হয়। এমনকি খুনিদের দেশের বাইরে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পর খুনিদের বিচার শুরু হয়। একইসঙ্গে ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস ও এই দিনে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। পরে উচ্চ আদালত ১২ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। এখন পর্যন্ত ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। একজন বিদেশে মারা গেছেন। পাঁচ জন পলাতক। 

এদিকে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঘোষিত ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিল করা হয়েছে। মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।

/এএম/
 
মঈন আব্দুল্লাহর পাশের আসনে বসা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের ছেলে মুয়াজ আরিফ 
মঙ্গলবার দুপুরে কালো রঙের একটি প্রাইভেটকার চালিয়ে বরিশাল নগরীতে আসেন মঈন 
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মঈন আব্দুল্লাহ 
১ / ০