শুয়ারকপ মাস্রুফের বনখেকো আব্বুর লুঙ্গি উত্তোলন হওয়াতে আজ কিছুটা নষ্টালজিক হয়ে গেলাম। কত বছরের স্মৃতিরা ভীড় করে এলো। দীর্ঘদিনের সংগ্রামের সাথী - বিপরীত দিকে আর কি। যদিও সে ব্লক করে রেখেছে, কিন্তু আমি ভালোবাসা দিয়েই যাবো। অন্তত সতেরো আঠারো বছরের পর্যবেক্ষণে মনে হয় শুয়ারটাকে কিছুটা বুঝতে পারি। এইটা এক ধরণের ক্যাটাগরি। কিছু মানুষ আছে যাদের প্রকৃত যোগ্যতা নাই কিন্তু যোগ্যতাকে তারা মিমিক করতে পারে খুব ভালো ভাবে। শুয়ারকপ হলো সেই ক্যাটাগরির লোক। ইমপোস্টার। সেই শাহবাগিদের সচলায়তন ব্লগে অতিথি হিসেবে গুতাগুতি করে নিজেকে উদীয়মান জ্ঞানী হিসেবে দেখানোর চেষ্টাগুলো আজ হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস। আওয়ামী লীগ ২০০৮ এ ক্ষমতায় আসার পর প্রথম বিসিএসে পুলিশ হওয়ার পর উপন্যাসের বইয়ের উপর সরকারী পিস্তলের ছবি দিয়ে নাবালক কিশোর শাহবাগিদের সেই মিমের মতো সাদা ফেনায় কম্পিউটার স্ক্রিণ পুরা রুম বাংলা ইন্টারনেটস্ফিয়ার ছদরবদর করে ফেলার ইতিহাসও আজ কেবলই স্মৃতি।

এই ধরণের ইম্পোস্টাররা বাংলাদেশে খুব ভালো করে। এখন পর্যন্ত শুয়ারকপ রাইট ট্র্যাকে আছে। কিন্তু সে আসলে আরও উপরে থাকতে পারতো। থাকার কথা ছিলো। কেবলমাত্র আলুর দোষে সে অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়েছে। স্বাধীনতার প্রথম প্রহরে অস্ত্র্ হাতে তুলে নেয়া পুলিগ বাহিনীকে গোলাপ দিন আন্দোলনের জন্মদাত্রী জোয়ার্দার রিপা থেকে মিল্ফ বন্দনা কবির, সুইপারকপ সবার সাথেই তুখোর মুক্তিযুদ্ধ করেছে। থানার ভেতরে নারী কনস্টেবলের সাথে লদকালদকি করার সময় স্ত্রীর কাছে হাতেনাতে ধরা পড়ার ঘটনাটি হলো সুপারকপের জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। তার অনেক সম্ভাবনা সেদিন ধ্বংস হয়ে গেছে, অগ্রযাত্রা রুদ্ধ হয়ে গেছে। কারণ তার সেই স্ত্রী ছিলো এক ডিআইজির কন্যা, যেই শশুরের জোরে সে অনেক কিছু পেয়েছে। তার বউ এইটা সহ্য করেনাই, তালাক দিয়ে দিয়েছে। না হলে এই বাঙ্গু প্রফেশনাল লাইফে সে আরো অনেক কিছু পেতো। কিন্তু এখন তাকে আবার নিজের জোরেই বাকি সংগ্রাম করতে হচ্ছে।

তবে সুইপারকপের ভেতরে শাহবাগি স্বত্তা শক্তিশালী। যে কোন পরিস্থিতিতে এরা বিজয় ঘোষণা করতে পারে। বর্তমান সার্বিয়ান স্ত্রীকেও সে বাঙ্গু তরুণদের কাছে আরেক সফলতা হিসেবে তুলে ধরতে পেরেছে। মাসরুফকে যদ্দূর দেখেছি এবং বাংলা সমাজকে যদ্দূর দেখেছি, আমার ধারণা সে এখানে তরক্কী করবে। আব্বুর লুঙ্গি উত্তোলনের চেয়ে অনেক বড় বিপর্যয়কে সে মিথ্যাচার ও দুর্নীতি দিয়ে কাভার করে গেছে। আর্মির ট্রেনিং থেকে কিক আউট হলেও সে থেমে যায়নাই, শশুরের জোরে ও আওয়ামী কানেকশনে পুলিগ অফিসার হয়ে গেছে। আলুুর দোষে সেই খুঁটি ভেঙ্গে যাওয়ার পরও সে ভেঙে পড়েনাই। নতুন সুযোগ বানিয়ে নিযেছে। প্রাক্তণ শশুরের কাছ থেকে আত্মরক্ষা করতে চাকরি বাচাতে শিক্ষাছুটি নিয়ে বিদেশ পালিয়ে গেছিলো। আব্বুর অঢেল টাকার কিছু খরচ করে জয়ের মতোই হার্ভার্ড থেকে ডিগ্রি কিনে প্রচন্ড পন্ডিত হয়ে গেলো। বিপর্যয়কে সম্ভাবনায় রুপান্তরিত করার এইরকম আরেকটা উদাহরণ দেখান পারলে। তার চিকন বুদ্ধি অর্থ্যাৎ ধুর্তামি ভালো কোয়ালিটির। সে টাইম নিতে জানে। আরো গুরুত্বপূর্ণ হলো তার অঢেল টাকার সাপ্লাই আছে। সুতরাং এইটা তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে না। সে জানে বাংলাদের কাছে টাইম ইজ দ্য বেস্ট এডভোকেট রফিক।

শুয়ারকপের মতো আরো হাজার হাজার শুয়ার বাংলাদেশে আছে। ব্যক্তি হিসেবে সে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ কিছু না। কিন্তু তার প্রকাশের ভেতর দিয়ে বাংলা সমাজকে দেখার ও বুঝার একটা বিষয় আছে।

আপনি স্বাভাবিক সমাজে দেখবেন মানুষজন যে যার কাজ করে। একজন পুলিশ চেষ্টা করে জাদরেল পুলিশ হিসেবে সফল হওয়ার জন্য। ভালো ডিটেকটিভ হওয়ার জন্য। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্টটাইম শিক্ষক হয়ে খিউল বুদ্ধিজীবি হয় না। কিন্তু বাংলাদের সমাজে মুটা বেনজির ডক্টরেট নেয়। মাসরুফ স্টয়িক ফিলসফি করে। নসুতে পড়ায়। অর্থ্যাৎ আরো ছাত্রী মুরগি শিকার করে আর কি।

বাংলারা সম্ভবত আদিম কাল থেকে সর্বরোগের এক মহৌষধ টাইপের চিন্তায় অভ্যস্ত এবং বিশ্বাসী। এইরকম প্যানাসিয়া-পাগলা জাতি আর দ্বিতীয়টা নাই।