X

‘আমাদের জন্য যারা বেইমান, ভারতের তারা বন্ধু’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৯ এপ্রিল ২০২৪, ২১:১১আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ২১:১১

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেছেন, আমাদের জন্য ভারতের রাজনীতি ও পররাষ্ট্রনীতির সবচেয়ে বড় ক্ষতিকর দিক হচ্ছে, আমাদের জন্য যারা বেইমান, ভারতের জন্য তারা বন্ধু।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন আয়োজিত ‘আগ্রাসন-আধিপত্যবাদ মোকাবিলায় রাষ্ট্র সংস্কারের রাজনীতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের কথা তুলে ধরে কাইয়ুম বলেন, বাংলাদেশের প্রায়রিটি হবে, ভারত আমার এখানে আসতে চায় আসবে; আমার ওপর দিয়ে যেতে যায় যাবে। কারণ আমার প্রায়রিটি তো আমার দেশ, আমার বাণিজ্য, আমার মানুষের সুবিধা, আমার যোগাযোগ। কিন্তু আমাদের দেশে যারা সরকার হিসেবে এসেছে, তারা প্রায়রিটিকে ভারতের জায়গায় নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, ভারত বন্ধুত্বের নামে এই দেশের মানুষের সঙ্গে বেইমানি করে। তারা (ভারত) বেইমানকে এই দেশে ক্ষমতায় রাখতে পছন্দ করে। ভারতের রাজনীতি ও পররাষ্ট্রনীতির সবচেয়ে বড় ক্ষতিকর দিক হচ্ছে, আমাদের জন্য যারা বেইমান, ভারতের জন্য তারা বন্ধু। ভারতের জনগণ আমাদের বন্ধু, কিন্তু ভারত রাষ্ট্র আমাদের বন্ধু নয়। ভারত তার জনগণের কাছেও বন্ধুরাষ্ট্র নয়।’

বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় যারা আছে, তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনও অধিকার নেই মন্তব্য করে হাসনাত কাইয়ুম বলেন, বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তারা ক্ষমতায় থাকতে পারে অন্যের সাহায্য নিয়ে। কারণ তাদের ক্ষমতাকাঠামোর মধ্যে কোনও জবাবদিহি নেই, গণতন্ত্র নেই। এ জন্যই বাংলাদেশকে সংস্কার করে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র করতে হবে। জনগণের কাছে জবাবদিহি ও বাধ্যগত সরকার করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ভারতের বিজেপি যখন হিন্দুত্ববাদের কথা বলে, তখন সে হিন্দুদের বিরুদ্ধে, হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে কথা বলে। কিন্তু সে যেই হাতিয়ার ব্যবহার করে, সেটা হচ্ছে হিন্দুত্ববাদ। বাংলাদেশে যেমন যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে, তারা আসলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কোনও মানুষ না। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ব্যবহার করে। অতএব এই ব্যাপারগুলো পরিষ্কার বোঝা দরকার।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের রাজনৈতিক সমন্বয়ক ফরিদুল হক বলেন, ভারত আমাদের ধর্মের নামে, জাতির নামে ভাগ করতে চায়। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, তাহলে আমাদের ভাগ করতে পারবে না। 

দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য প্রীতম দাশ বলেন, আমরা অর্থনৈতিকভাবে কাজ করতে চাই। কিন্তু ভারত ক্রমাগত আমাদের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্রিটিশরা যখন এমন করতো, তখন জনগণ সেটা বুঝতো। কিন্তু ভারতের আগ্রাসন মানুষের চোখে পড়ছে না। না পড়ার কারণ হচ্ছে আমাদের শাসকগোষ্ঠী।

সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন। এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন মিডিয়া ও প্রচার সমন্বয়ক সৈয়দ হাসিব উদ্দিন হোসেন প্রমুখ।

/এএজে/এনএআর/
সম্পর্কিত
চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন খাতে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময় হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
ইলিয়াস আলীসহ সব গুম রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় হয়েছে, অভিযোগ রিজভীর
শেখ হাসিনাকে নরেন্দ্র মোদির ‘ঈদের চিঠি’ ও ভারতে রেকর্ড পর্যটক
সর্বশেষ খবর
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ (ফাইল ছবি)
মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি
‘নেপোলিয়ন’-এর স্থিরচিত্র
কান উৎসব ২০২৪১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: এএনআই
পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস, সিপিআই-এম ইন্ডিয়া জোট নয়, বিজেপির এজেন্ট: মমতা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল
টানেলে অপারেশনাল কাজে গেলে টোল দিতে হবে না জরুরি যানবাহনকে
সর্বাধিক পঠিত
র‌্যাব মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
টাকা
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম। ছবি: রয়টার্ষ
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েল ও ইরান
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী

সার্বিক অগ্রগতির পথে প্রধান বাধা বিএনপি: ওবায়দুল কাদের

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:২৫ আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ২০:০৫

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি অর্থপাচার ও দুর্নীতির রাজা। তারা সাম্প্রদায়িক শক্তি। তাদের রুখতে হবে। দেশের সার্বিক অগ্রগতির পথে প্রধান বাধা বিএনপি। এদের প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না, এদের রুখতে হবে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকালে রাজধানী খামারবাড়ির বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, নেতা লন্ডনে, কর্মীরা হতাশ, কী করবে, হাল ধরার কেউ নেই। বিএনপি পথহারা পথিকের মতো দিশেহারা। এই দলের ভবিষ্যৎ আছে, এটা তাদের কর্মীরাও বিশ্বাস করে না। তাই তাদের নিয়ে মাথাব্যথার কোনও কারণ নেই।

তিনি আরও বলেন, আজ যারা বাংলাদেশ নিয়ে বেশি কথা বলে, কথায় কথায় সরকারের, গণতন্ত্রের সমালোচনা করে; যারা আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থ, তারা নির্বাচনের সমালোচনা করে। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের রক্তস্রোত যারা বইয়ে দিয়েছিল, কারাগারে জাতীয় নেতাদের হত্যা করেই তাদের গণতন্ত্র শুরু। এরাই এখন সবচেয়ে বেশি গণতন্ত্রের কথা বলে।

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, নিজেরা বিপদে আছে, উল্টো বলে দেশ বিপদে আছে। বাংলাদেশ বিপদে নেই। শেখ হাসিনা যতক্ষণ আছেন, ইনশাআল্লাহ দেশ যথাযথ উচ্চতায় অধিষ্ঠিত থাকবে।

১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের প্রসঙ্গে কাদের বলেন, এটা প্রমাণ হয়েছে আমাদের স্ট্যাবিলিটির প্রতীক, নিরাপত্তা, গণতন্ত্র, অর্থনীতি, ভাবমূর্তি শেখ হাসিনার হাতে নিরাপদ। সে জন্যই তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০০১, মাঝে পাঁচ বছর ষড়যন্ত্রমূলক নির্বাচনে তাকে হারানো হয়েছিল। এরপর ২০০৯ থেকে এখন পর্যন্ত ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত আছেন। আমরা ১৫ ফেব্রুয়ারি মার্কা নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এবারে নির্বাচন কোনও সেমি ডেমোক্র্যাটিক নির্বাচন নয়, এটা ডেমোক্র্যাটিক নির্বাচন ছিল। বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি, তারপরও ৪২ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। এটা অনেক উন্নত দেশেও হয় না।

এ সময় কৃষির প্রতি জোর দিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, অন্য সবকিছুর উত্থান-পতন হতে পারে কিন্তু কৃষি ঠিক থাকলে দেশর সব ঠিক। তাই আমি সবাইকে বলবো, নেত্রীর যে প্রায়রিটি, তা প্রায়োগিক বাস্তবতায় অক্ষরে অক্ষরে পালন করবেন। বাংলাদেশে স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনায় হয়েছিল কৃষকদের হাতে। খণ্ড খণ্ড কৃষক বিদ্রোহ, ফকির, তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা, নীল বিদ্রোহ—এসব কৃষকদের আন্দোলন।

কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, কৃষক লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু প্রমুখ।

/এমআরএস/এনএআর/এমওএফ/

কারাগার এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:০৮ আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:০৮

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপির জন্য দিনের আলো যেন নিষিদ্ধ, বিএনপির নেতাকর্মীরা মুক্ত বাতাস গ্রহণ করা থেকে নিষিদ্ধ, এদেরকে সবসময় কারাগারে থাকতে হয়। বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা হয়ে গেছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জিয়া প্রজন্মদল কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক আয়োজিত বিএনপির সকল রাজবন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে কারাগারে ঢুকানো, ধরে ফেলা এই কর্মসূচি যেন শেখ হাসিনার শেষই হচ্ছে না। আমার মনে হয় তিনি (শেখ হাসিনা) একটা আতঙ্কের মধ্যে ভুগছেন। এর কারণ হলো, তিনি (শেখ হাসিনা) জানেন তার কোনও জনসমর্থন নেই। জনসমর্থন না থাকলে সেই সরকাররা প্রচণ্ড স্বেচ্ছাচারী হয়, ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপির ২৫ থেকে ২৬ হাজার নেতাকর্মী ডামি নির্বাচনের সময় প্রায় চারমাস কারাগারে ছিলেন। কয়েক হাজার নেতাকর্মী এখনও কারাগারে বন্দি রয়েছে। এর জবাব কি শেখ হাসিনা দিতে পারবেন? এর জবাব যদি শেখ হাসিনা দিতে পারতেন তাহলে তিনি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দিতেন। শেখ হাসিনা যেভাবেই হোক ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। তিনি (শেখ হাসিনা) আজকে বলেছেন, ‘রাজবন্দী কেউ নেই; রাজনৈতিক কারণে কেউ বন্দি নেই। যারা বন্দি রয়েছে তারা বিভিন্ন মামলার আসামি।’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, রাজবন্দি নামে কোনও শব্দ কি আইনগ্রন্থে লেখা আছে? রাজনীতি যারা করে তাদেরকে

কারাগারে বিভিন্ন মামলা দিয়েই ঢুকানো হয়। এ রীতি ব্রিটিশ আমল থেকেই চলে আসছে। আপনার বাবা পাকিস্তান আমলে অনেকবার জেলে গিয়েছেন। সেখানে আপনার বাবা যে রাজনৈতিক কারণে জেলে গিয়েছে সে কথা লেখা নেই। উপমহাদেশে এরকমভাবে অনেকেই কারাগারে গিয়েছেন। মহাত্মা গান্ধীসহ আরও অনেকেই কারাগারে গিয়েছেন। কিন্তু কোথাও রাজনৈতিক কারণে কারাগারে গিয়েছে সেটা লেখা থাকে না। যারা কায়েমি শাসকগোষ্ঠী তারা বিভিন্ন ধরনের অপরাধে তাদের নাম দিয়ে দেয়। আপনি বলছেন, তারা (বিএনপির নেতাকর্মী) বিভিন্ন মামলার আসামি। এটা তো আপনি বলছেন! গোটা জাতি মনে করে, আপনি ষড়যন্ত্র করে আন্দোলনকামী, গণতন্ত্রকামী, যারা সত্যকথা বলে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নাশকতার মামলা, মিথ্যা মামলা দিয়ে আপনি তাদেরকে কারাগারে বন্দি করে রেখেছেন।

জিয়া প্রজন্মদল কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট পারভীন কাউসার মুন্নীর সভাপতিত্বে এবং জিয়া প্রজন্মদল কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা ও মহাসচিব মো. সারোয়ার হোসেন রুবেলের সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী শফু, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির প্রমুখ।

/এএজে/এমএস/

ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৮ এপ্রিল ২০২৪, ২১:৩৬ আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ২১:৪৭

ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথেরিন কুকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি নেতারা।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুর সোয়া ১২টায় রাজধানীর বারিধারায় ব্রিটিশ হাইকমিশনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যা চলে দুপুর ১টা পর্যন্ত। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ অংশ নেন।

অপরদিকে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে ছিলেন হাইকমিশনের পলিটিক্যাল সেকশনের কর্মকর্তা।

 

/জেডএ/এপিএইচ/এমওএফ/
উপজেলা নির্বাচন

মন্ত্রী-এমপি’র আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আ.লীগের, আছে শাস্তির বার্তাও

মাহফুজ সাদি
১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:১৬ আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৭:৫৪

আসন্ন চার ধাপের উপজেলা নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে নির্দেশনা না মানলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বারবার সতর্ক করার পর এবার চিঠি দিয়ে এবং সাংগঠনিকভাবে এই নির্দেশনা দেওয়া হলো।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার এ নির্দেশনা দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকদের জানিয়ে দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সে অনুযায়ী, নিজ নিজ বিভাগের মন্ত্রী-এমপিদের বিষয়টি জানাতে শুরু করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।

এ ছাড়া কেন্দ্রীয় দফতর থেকে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের নির্দেশনাটি জানাতে মন্ত্রী-এমপিদের নামে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্ভরশীল একটি সূ্ত্র। সূত্রমতে, চিঠিতে দলীয় মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী না হতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে নির্দেশনার কথা সাংগঠনিক সম্পাদকদের মাধ্যমেও পুনরায় জানানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তিন জন সাংগঠনিক সম্পাদক বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা তাদের আত্মীয়দের প্রার্থী করে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নেমে পড়ছেন। এতে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত অন্য প্রার্থীদের সঙ্গে বিরোধ তৈরি হচ্ছে এবং নির্বাচনি সহিংসতার ঝুঁকি বাড়ছে। দল ও সরকার শান্তিপূর্ণ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে বদ্ধপরিকর। সে কারণে প্রথমে দলের পক্ষ থেকে মন্ত্রী-এমপি ও নেতাদের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করতে বলা হয়েছে। তাতেও কাজ না হওয়ায় চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি সাংগঠনিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আগেও দলের পক্ষ থেকে মন্ত্রী-এমপিদের বারবার সতর্ক করা হয়েছে। এবার দলীয় ও সাংগঠনিকভাবে জানানো হচ্ছে। সব মন্ত্রী-এমপিকে এই নির্দেশনা জানানো হচ্ছে। আমরা অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ উপজেলা নির্বাচন চাই।’

দলটির চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘এরইমধ্যে দলের নির্দেশনা এমপি-মন্ত্রীদের জানানো শুরু হয়েছে। নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীকে ফোন করে তার ছেলেকে ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য বলা হয়েছে।’

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকদের নিয়ে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এতে দফতর সম্পাদক ও উপদফতর সম্পাদকরাও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সাংগঠনিক সম্পাদক ও দফতর সম্পাদককে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয়দের প্রার্থী হওয়া মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের। তাদের দলীয় প্রধানের নির্দেশনা জানিয়ে চিঠি দেওয়া এবং সাংগঠনিক সম্পাদকদের কথা বলার নির্দেশনা দেন তিনি।

জানা গেছে, বৈঠকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও মাদারীপুর সদরের সংসদ সদস্য শাজাহান খান এবং নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীকে ফোন করেন সংশ্লিষ্ট সাংগঠনিক সম্পাদকরা। এই দুই নেতার ছেলেরা উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন এবং তারা তাদের ছেলেদের পক্ষে কাজ করছেন।

সূত্রমতে, আগামী ২ মে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হবে। ওই অধিবেশন সংসদীয় দলের বৈঠকে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের উপজেলা নির্বাচন বিষয়ে প্রয়োজনীয় চূড়ান্ত নির্দেশনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া শিগগিরই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদেরও বৈঠক হতে পারে। সেখানেও বিষয়টি আলোচিত হবে।

আওয়ামী লীগ সূত্র বলছে, এমপি-মন্ত্রীরা যাতে উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে না পারেন, সে জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকেও নানাভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। আওয়ামী লীগের নেতারাও বিভিন্ন জেলায় প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার পরামর্শ দিচ্ছেন।

প্রথম ধাপে আগামী ৮ মে দেশের ১৫২টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় ১৫ এপ্রিল, বাছাই ১৭ এপ্রিল, প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ২৩ এপ্রিল।

আর দ্বিতীয় ধাপে ১৬১টি উপজেলায় আগামী ২১ মে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল অনুযায়ী, এ ধাপে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ২১ এপ্রিল, বাছাই ২৩ এপ্রিল, প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল এবং প্রতীক বরাদ্দ ২ মে। এই নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান, সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট হবে।

নির্বাচন কমিশন জানায়, দেশের ৪৮১টি উপজেলায় চার ধাপের নির্বাচন শুরু হবে ৮ মে, শেষ হবে জুনের প্রথম পক্ষে। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দুই ধাপের তফসিলও ঘোষণা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:

উপজেলা নির্বাচন: ঈদের ছুটিতে পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে ‘সক্রিয়’ আ.লীগ নেতারা

/এপিএইচ/এমওএফ/
 
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন আয়োজিত সভায় বক্তারা 
১ / ০